নিজস্ব প্রতিবেদক: উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের কর্মস্থল ছেড়ে ঢাকায় অবস্থানের কঠোর সমালোচনা করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, আমার কাছে অভিযোগ রয়েছে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মরতদের অধিকাংশ ঢাকায় অফিস করেন। সেতু নির্মিত হচ্ছে নারায়ণগঞ্জে, আর প্রকল্পের অফিস কেন ঢাকায়? এটিও প্রকল্প বাস্তবায়ন বিলম্বিত হওয়ার একটি কারণ। প্রকল্প এলাকায় অফিস থাকবে, ঢাকায় নয়। রোববার ভারতীয় ঋণ কর্মসূচির আওতায় বাস্তবায়নাধীন প্রকল্প এবং ৩য় শীতলক্ষ্যা সেতুর নির্মাণকাজের অগ্রগতি পর্যালোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।

প্রকল্পকে কেন্দ্র নতুন ভবন নির্মাণের সমালোচনা করে মন্ত্রী বলেন, লক্ষ্য করছি, পুরো ঢাকা শহরজুড়ে বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। এসবের প্রয়োজনীয়তা কতটুকু। যেখানে যাই সেখানে সড়কের অফিস, প্রকল্পের অফিস। বেইলি রোড, বনানী, গুলশান, বনানী কবরস্থানের পাশে, শ্যামলী, মিরপুর, এলেনবাড়ি কত অফিস প্রয়োজন। তাহলে আলাদা করে সড়ক ভবন কেন। ভবিষ্যতে প্রকল্প গ্রহণের সময় অফিস ভবনসহ অন্যান্য স্থায়ী স্থাপনা নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা খতিয়ে দেখতে পরিকল্পনা উইংকে নির্দেশনা দেন তিনি।

অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে ভারতের সঙ্গে ‘উষ্ণ, মসৃণ এবং ভবিষ্যতমুখী’ সম্পর্ক রয়েছে মন্তব্য করে কাদের বলেন, প্রতিবেশীর সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকলে, পিপল-টু-পিপল কানেকটিভিটি সুদৃঢ হলে, দুদেশের মধ্যকার অনেকে অমিমাংসীত সমস্যা সহজে সমাধান সম্ভব। এলওসি-টু এর আওতায় সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অধীনে চারটি প্রকল্প নেওয়া হয় জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, এর মধ্যে দুটির কাজ বা প্রকিউরমেন্ট শেষ হয়েছে, দুটি চলমান রয়েছে। এছাড়া এলওসি-টু এর আওতায় একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। তিনটি প্যাকেজের মধ্যে দুটির কাজ প্রাথমিকভাবে শুরু হলেও প্রত্যাশা অনুযায়ী গতি পাচ্ছে না। এলওসি-৩ এর আওতায় কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প আসছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, এর মধ্যে ১৩৫ কিলোমিটার দীর্ঘ বেনাপোল-যশোর-নড়াইল-ভাটিয়াপাড়া-ভাঙ্গা সড়ক চারলেনে উন্নীতকরণ প্রকল্প অন্যতম। এ প্রকল্পেও সময়মত ভূমি অধিগ্রহণ একটি চ্যলেঞ্জিং কাজ। বাংলাদেশ সরকার এবং এলওসি-র অধীনে বাস্তবায়নাধীন এ প্রকল্পের আওতায় ৩১টি সেতু, ৫টি ফ্লাইওভার, ১২টি ওভারপাস, ২টি রেলওভারপাস, ১১টি আন্ডারপাসসহ ১৫৭টি কালভার্ট নির্মাণ করা হবে।

বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সেতুর কাজও প্রায় শেষ হতে চলেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আশা করা যাচ্ছে এ বছরের শেষ নাগাদ সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হবে। এলওসি ছাড়াও ভারতের অনুদানে বিবিরবাজার হতে সুয়াগাজি পর্যন্ত সড়ক চারলেনে উন্নীত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ সরকার এবং সৌদি সরকারের যৌথ অর্থায়নে প্রায় ৬০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলায় ৩য় শীতলক্ষ্যা সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, প্রায় সোয়া এক কিলোমিটার দীর্ঘ সেতুর সাথে ২ কিলোমিটারের বেশি দীর্ঘ সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হবে। ইতোমধ্যে সৌদি ফান্ডের অর্থ ছাড়ে বিলম্বসহ করোনা মহামারী এবং অন্যান্য কারণে প্রকল্পটিতে ধীরগতি রয়েছে। আমি আশা করব, শম্বুকগতিতে পেয়ে বসা এ সেতুর নির্মাণ কাজ এখন গতি পাবে।